দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি - রাতে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাদুধ খাওয়ার উপকারিতা কি? এর প্রশ্নটি অনেকে করে থাকেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই
আছেন যারা নিয়মিত দুধ পান করে কিন্তু এর উপকারিতা সম্পর্কে কোন ধারণা
নেই। দুধ হয়তো সম্পর্কে জানলে আপনিও হয়তো অবাক হয়ে যাবেন। দুধ পুষ্টিগণের
ভরপুর একটি খাবার। তাই এই দুধ পান করার আগে অবশ্যই আপনাকে এর উপকারিতা সম্পর্কে
জানতে হবে।
দুধের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। দুধের হচ্ছে প্রোটিন ভিটামিন মিনারেল
চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেট। তাই যারা পুষ্টিহীনতায় ভুগেন তারা নিয়মিত যদি এক
গ্লাস দুধ পান করে তাহলে তার শরীরের সাথে কি ঘটবে সে নিজে দেখেই আশ্চর্য
হয়ে যাবে। চলুন জেনে নেই দুধ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃ দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি
- দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি
- রাতে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
- সকালে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
- দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময়
- অতিরিক্ত দুধ খেলে কি হয়
- প্রতিদিন কতটুকু দুধ খাওয়া উচিত
- শেষ মন্তব্যঃ দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি
দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি
দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি জানেন কি? না জানলেও কোন সমস্যা নেই কারণ আমাদের
এই পোস্টটি পড়ার পর আপনি খুব সহজেই এর উপকারিতা থেকে শুরু করে খাওয়ার উপযুক্ত
সময় এগুলো সব বিষয়ে খুব ভালোভাবে জানতে হবে। দুধের উপকারিতা বলে শেষ করা
সম্ভব নয়। দুধ আমাদের শরীরের সকল পুষ্টির চাহিদাকে পূরণ করে। পৃথিবীতে দু
ধরনের একমাত্র খাবার যা ক্ষুধা ও তৃষ্ণা কে নিবারন করে। দুধের এত এত উপকারিতা
থাকা সত্ত্বেও আমরা অনেকেই এই দুধ পান করা থেকে বিরত থাকি।
আরো পড়ুনঃ
রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়
একজন শিশু জন্মের পর থেকে তার মায়ের দুধ পান করে শিশুটি যদি তার মায়ের দুধ
সঠিকভাবে পান না করতে পারে তাহলে তার মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটে। তাই একজন
শিশু হওয়ার পর থেকে তার মায়ের দুধ পান করা খুবই জরুরী। শুধু একজন শিশুরই নয়
বরং শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকে নিয়মিত এক গ্লাস করে দুধ পান করা উচিত। নিয়মিত এক
গ্লাস দুধ পান করার ফলে একজন মানুষের শরীরের যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া
সম্ভব।
দুধ সকল বয়সের মানুষের জন্যই খুবই উপকারী একটি পুষ্টি। কেননা সকলের পুষ্টি
চাহিদা পূরণ করতে দুধের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা
দুধকে তাদের খাদ্য তালিকা থেকে বঞ্চিত রাখে তা কিন্তু একদমই সঠিক নয়।
আগেকার সময়ে পরিবারের সকলে একসাথে মিলে রাতের বেলা দুধ খাওয়ার একটি প্রচলন
ছিল। কিন্তু বর্তমানে সময় তা কিন্তু একদমই দেখা যায় না। আবার আগেকার সময়
বাচ্চাদেরকে প্রতিদিন অন্য খাবারের বদলে দুধ খাওয়ানো হতো।
কিন্তু এখন দুধের বদলে বিভিন্ন হাবিজাবি ফাস্টফুড জাতীয় খাবার দেওয়া হয় যা
বাচ্চার শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতি করে। দুধে রয়েছে প্রোটিন মিনারেল
ক্যালসিয়াম ফসফরাস পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইম ও আরো
বিভিন্ন ধরনের উপাদান। দুধ খাওয়ার ফলে মানবদেহের দাঁত ও হাড় শক্ত করে।
শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে। রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। দুধ খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এছাড়াও
আর ও অনেক গুনাগুন রয়েছে দুধের মধ্যে।
রাতে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
রাতের দুধ খাওয়ার উপকারিতা অনেক। দুধ শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি
উপাদান। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ পান করা শরীরের জন্য যে কত
উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসে তা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস
দুধ পান করলে শরীরের কোলেস্টোরেলের মাত্রা ঠিক থাকে। দুধে যে প্রোটিন রয়েছে তা
শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কে ধ্বংস করে ভালো কোলেস্টেরলে পরিণত করে। গরুর
দুধে ভিটামিন এ ফসফরাস ক্যালসিয়াম প্রোটিনে ভরপুর।
আরো পড়ুনঃ
কাঁচা গাজর খাওয়ার উপকারিতা
রাতে এক গ্লাস দুধ পান করলে আমাদের শরীরের আর হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাতে ঘুমানোর আগে কেউ যদি এক গ্লাস দুধ পান করে
তাহলে তার ঘুম অনেক ভালো হয়। কেউ যদি রাতে অনিদ্রা তে ভোগেন তাহলে তারা অবশ্যই
নিয়মিত রাতে এক গ্লাস দুধ পান করুন। কেননা যারা অনিদ্রাতে ভোগে তাদেরকে
ডাক্তার রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়। রাতে ঘুমানোর আগে
এক গ্লাস দুধ পান করলে শরীরের যাবতীয় হাড় কে মজবুত করে।
কেননা দুধের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি ও ক্যালসিয়াম যা হাড় কে মজবুত রাখতে
সহায়তা করর। রাতে এক গ্লাস দুধ পান করে ঘুমালে সারাদিন তার শরীরে আর কোন
ক্লান্তি থাকে না। রাতে নিয়মিত দুধ পান করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অনেক সময় দেখা যায় ত্বককে সুন্দর করার জন্য
দুধের স্বরকে মুখে মাখেন তারা যদি চান তাহলে প্রতি রাতে এক গ্লাস দুধ পান
করতে পারেন যা আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে। আশা করি দুধ
খাওয়ার উপকারিতা কি তা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
সকালে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
সকালে দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি তা হয়তো অনেকেই জানেন না। জেনে সকালে দুধ খেলে
কি কি উপকার পাওয়া যায়। অনেকে মনে করেন সকালে খালি পেটে দুধ খাওয়া ঠিক নয়।
কিন্তু কথাটি একদম সঠিক নয়। আপনি চাইলে সকালে খালি পেটে দুধ পান করতে
পারেন সকালে কিংবা রাতে যখনই দুধ পান করেন না কেন এর উপকারিতা সমান। কারণ দুধের
মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন সমস্যা থেকে বাঁচাতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তবে যাদের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রয়েছে তারা সকালে খালি পেটে দুধ না খাওয়াই
ভালো। কারণ গ্যাস্ট্রিক থাকার ফলে পেট খারাপের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে
তাদের এরকম কোন সমস্যা নাই তারা চাইলে সকালে যেকোনো সময় দুধ পান করতে পারেন
তাতে কোন সমস্যা নেই। সকালে দুধ পান করার ফলে সারাদিন শরীরের মধ্যে শক্তির
কোন অভাব হয় না। শরীর এবং মন উভয়ই সতেজ থাকে। দুধ যেহেতু পুষ্টিগুনে ভরপুর
একটি খাবার তাই আপনি চাইলে যেকোনো সময় তা পান করতে পারেন।
দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময়
দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন জানেন কি? আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত
দুধ পান করেন কিন্তু তারা জানে না দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন। কোন সময় দুধ
খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। তো চিন্তার কোন কারণ নেই কারণ আমরা আপনাদের
সামনে দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন তা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা
করবো ইনশাল্লাহ। দুধ খাওয়ার উপকারিতা অনেক কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকে আছে
যারা দুধ খেতে চান না।
বর্তমান সময় সকল চিকিৎসকরা দিনে অন্তত এক গ্লাস দুধ পান করার পরামর্শ দেন।
আমাদের প্রতিদিন নাস্তা করার সময় দুধের উপস্থিতি থাকা অত্যন্ত জরুরি। কেননা
দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা শরীরের প্রোটিন এর চাহিদা পূরণ
করতে সহায়ক। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস দুধ পান করা উচিত। কেননা দিনে
পরিশ্রম করার ফলে শরীরে ক্লান্তির ভাব দেখা দিতে পারে তাই কেউ যদি সকালে
এক গ্লাস দুধ পান করে তাহলে তার শরীরে কোন ক্লান্তি দেখা যাবে না।
রাতে এক গ্লাস দুধ পান করা প্রতিটা মানুষের জন্যই উচিত। যারা ব্যায়াম করেন
তারা ব্যায়াম করার পূর্বে এক গ্লাস দুধ পান করে নিতে পারেন। যারা অনিদ্রা তে
ভোগেন তারা চাইলে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ পান করতে পারেন। কেননা ঘুমানোর আগে
কেউ যদি এক গ্লাস দুধ পান করে তাহলে তার খুব সহজেই ঘুম চলে আসে। আশা করি আলোচনা
মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময় কখন।
অতিরিক্ত দুধ খেলে কি হয়
অতিরিক্ত দুধ খেলে কি হয় তার সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের এই পোস্টটিকে মনোযোগ
সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজে জানতে পারবেন অতিরিক্ত দুধ খেলে বেশি
উপকার পাওয়া যায় নাকি শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তো চলুন জেনে
নেওয়া যাক অতিরিক্ত দুধ খাওয়ার ফলে কি হয়। অতিরিক্ত দুধ পান করা ফলে শরীরে
অস্বস্তি দেখা দেয়। আমরা জানি দুধ পান করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
তাই বলে যে অনেক বেশি পরিমাণে দুধ পান করলে শরীরের জন্য তা উপকার বয়ে নিয়ে
আসবে তা কিন্তু একদম সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। অতিরিক্ত দুধ পান করার ফলে
গ্যাস্ট্রিকের মত সমস্যা সহ পেট খারাপের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই
বেশি পরিমাণে অতিরিক্ত দুধ পান করা একদমই উচিত নয়। ডাক্তাররা সবসময় নিয়মিত
এক গ্লাস দুধ পান করা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই কেউ যদি দিনে তিন চার গ্লাস দুধ
পান করে তাহলে তার শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে।
প্রতিদিন কতটুকু দুধ খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কতটুকু দুধ খাওয়া উচিত তা নির্ভর করে বয়স, লিঙ্গ, দেহের
শারীরিক চাহিদা এবং দেহের শারীরিক গঠনের উপর। এক থেকে আট বছরের শিশুর দৈনিক
সর্বোচ্চ দুই কাপ দুধ খাওয়ানো যেতে পারে এর বেশি খাওয়ানো ঠিক নয়। ৯ থেকে ১৮
বছর বয়সী কিশোর কিশোরীদের দিনে সর্বোচ্চ তিন কাপ দুধ খাওয়া যেতে পারে।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৯ থেকে ৬০ উর্দ্ধ ব্যক্তিরা দিনে সর্বোচ্চ দুই থেকে
আড়াই কাপ দুধ পান করতে পারেন। একাধিক গবেষণা, যেমন
The Journal of Bone and Mineral Research, প্রমাণ করে যে দিনে অন্তত
২-৩ কাপ দুধ হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ
করে। The American Journal of Clinical Nutrition অনুযায়ী, দুধে
থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। National Dairy Council-এর গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক নির্দিষ্ট পরিমাণে দুধ খাওয়া শরীরের মেদ
নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে ৩ কাপের বেশি দুধ
গ্রহণ করলে পেটের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা হতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে
কিডনির সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
শেষ মন্তব্যঃ দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি
দুধ খাওয়ার উপকারিতা কি তা সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমাদের এই পোস্টটির মধ্যে
বিস্তারিতভাবে আলোচনার চেষ্টা করেছি। দুধে রয়েছে অসংখ্য পরিমাণ উপাদান। যা
আমাদের শরীরের সকল ধরনের পুষ্টির চাহিদাকে পূরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দুধের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এন্টিঅক্সিডেন্টসহ আরো
নানা ধরনের উপাদান। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত দিনে অন্তত এক গ্লাস দুধ
পান করা।
প্রিয় পাঠক আমাদের এই পোস্টটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই
পোষ্টের নিচে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করতে ভুলবেন না। আর আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে
আপনার কাছে কোথাও যদি ভুলভ্রান্তি মনে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তা ক্ষমার
দৃষ্টিতে দেখবেন। আর বিষয়টি আমাদের জানানোর চেষ্টা করবেন আমরা অবশ্যই তা
পরবর্তীতে সংশোধন করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। আর প্রতিদিন এরকম নিত্য
নতুন তথ্যবহুল কনটেন্ট পড়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটিকে নিয়মিত ভিজিট করুন
ধন্যবাদ।
ড্রিমস ব্লগারেরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url