হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ

মাদকাসক্তি থেকে মুক্তির উপায়হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ কি? এটা অনেকেই জানেন না যার ফলে অনেক সময় বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশে হাই প্রেসার ও লো প্রেসার খুবই কমন একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হাই প্রেসার বা লো প্রেসার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে নিয়ে আসতে পারে। তাই আমাদের সকলেরই এর লক্ষণ সম্পর্কে জানা উচিত।
হাই-প্রেসার-ও-লো-প্রেসার-এর-লক্ষণ
এ দুটির লক্ষণ ও প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। হাই প্রেসার কে উক্ত রক্তচাপ বলা হয়। যা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, এবং কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। অপরদিকে লো ব্লাড প্রেসার কে নিম্ন রক্তটা বলা হয়ে থাকে। যা রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ কমিয়ে দিয়ে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, বিশেষত মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড, এবং কিডনিতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

পেজ সূচিপত্রঃ হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ

হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ

হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। হাই প্রেসার এর ক্ষেত্রে তেমন কোনো লক্ষণ চিহ্নিত করা যায় না। এটি নীরব ঘাতক যা সাইলেন্ট কিলার নামে পরিচিত। তবে অনেক সময় হাই প্রেসারের বিশেষ কিছু লক্ষণ চিহ্নিত করা যায় তা হল, সকালে অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করা, মাথা ঘোরা বা তার অনুভূত হওয়া, বুক ধরফর করা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, চোখ দিয়ে ঝাপসা দেখা, বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি হওয়া। আপনার যদি এরকম সমস্যা দেখতে পান তাহলে বুঝে নিবেন আপনার হাই প্রেসার হয়েছে আপনার খুব শীঘ্রই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
American Heart Association-এর মতে, রক্তচাপ ১৩০/৮০ mmHg এর বেশি হলে এটি উচ্চ রক্তচাপের মধ্যে পড়ে। লো প্রেসারের বেশ কিছু লক্ষণ চিহ্নিত করা যায় যেমন মাথা ঝিমঝিম করা, শরীর দুর্বল হওয়া, বুক ধরফর করা, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, ত্বক সাদা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। আপনার শরীরে যদি লক্ষণগুলো চিহ্নিত হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনি লো প্রেসারে আক্রান্ত হয়েছেন। এমতাবস্থায় আপনাকে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। European Society of Cardiology-এর মতে, রক্তচাপ ৯০/৬০ mmHg এর নিচে থাকলে তা নিম্ন রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয়।

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে করণীয়

হঠাৎ হাই প্রেসার হলে আপনার প্রথমে যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে তা হল নিজেকে একদম শান্ত রাখা। কোন অবস্থাতেই উত্তেজিত না হয়। তারপরে আপনাকে সকল ধরনের দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকতে হবে। যদি আপনার হঠাৎ করে প্রেসার বেড়ে যায় তাহলে দ্রুত বিশ্রাম নিন। আপনার হাই প্রেসার যদি হঠাৎ করে অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে আপনি হাই প্রেসার এর জন্য যে ওষুধটি নিয়মিত খান সে ওষুধটি খুব দ্রুত গ্রহণ করুন। ওষুধ খাওয়ার পরে যদি আপনার প্রেসার না কমে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

অথবা আপনি নিয়মিত তিন দিন যদি রাতে ঘুমের ওষুধ খান তাহলেও কিন্তু হাই প্রেসার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। তারপরও যদি আপনার প্রেসার না কমে তাহলে অবশ্যই আপনাকে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তবে পরপর তিন দিন ধরে আপনি নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খান তাহলে আশা করা যায় এ সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পাবেন। আর বাহ্যিক চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি পাবেন ইনশাআল্লাহ। আশাকরি আপনি বুঝতে পারছেন হঠাৎ হাই প্রেসার বেড়ে গেলে আপনার করণীয় কি হবে।

দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায়

দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় জানতে হলে বিস্তারিত পড়তে থাকুন। যারা হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তাদের ব্লাড প্রেসার যদি দ্রুত বেড়ে যায় তাহলে বিপদজনক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই আপনার যখন হাই প্রেসার অনেক বেড়ে যাবে তখন একদমই ঘাবড়ানো চলবে না। তা ঠিক পাঁচ মিনিট পরে সঠিক নিয়মে আবার ব্লাড প্রেসার মাপুন। দ্বিতীয়বার পেশার মাপার পরে যদি আপনার প্রেসার অনেক বেশি দেখায় তাহলে আপনাকে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যাদের দ্রুত ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায় কিন্তু তার কোন লক্ষণ চিহ্নিত করতে পারেন না এরকম সমস্যার রোগীদের খুব দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
দ্রুত-হাই-প্রেসার-কমানোর-উপায়
তবে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আপনাকে দুইটা কাজ করতে হবে তা হলো, ডাক্তার এর কাছে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আপনার ব্লাড প্রেসার কে একটু পর পর মাপতে থাকুন। আরেকটি আপনাকে যে কাজ করতে হবে তা হল আপনি ব্লাড প্রেসার এর জন্য কোন ওষুধ খান আর কোন কোন সময় খান আর কোন কোন বেলাতে ওষুধ খেতে মিস করেছেন তা একটি খাতাতে নোট করুন। আপনি যদি অন্য কোন ওষুধ খান তাহলে অবশ্যই সেগুলো সাথে করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন। দ্রুত হাই প্রেসার বেড়ে গেলে আপনাকে অবশ্যই মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।

হাই প্রেসার কমানোর খাবার

হাই প্রেসার কমানোর খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে যে যারা হাই প্রেসারে আক্রান্ত হয় তাদেরকে খুব দ্রুত তেতুল পানি খাওয়ানো হয় একদম ভুল এর গবেষণামূলক কোন তথ্য নেই। হাইপ্রেসার বেড়ে গেলে যে খাবারগুলো খাওয়া উচিত তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডাবের পানি, কলা, মালটা, লেবু, বেদেনা এজাতীয় পটাশিয়ামযুক্ত খাবার। এ খাবারগুলো খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে উত্তর রক্তচাপ থেকে বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
হাই-প্রেসার-কমানোর-খাবার
এছাড়াও আপনি খেতে পারেন কাঁচা রসুনের কুয়া। যারা সিস্তলিক প্রেসার এ ভোগেন তাদের জন্য কাঁচা রসুন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন শাক সবজি যেমন লাল শাক পালং শাক কলমি শাক লাউ শাক ইত্যাদি। আপনি চাইলে প্রচুর পরিমাণে পালং শাক খেতে পারেন। কেননা পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য খুবই ভালো। এগুলোর সাথে আপনি খেতে পারেন বিভিন্ন রঙিন সবজি।
যেমন লাউ, মিষ্টি কুমড়া, পটল, ঢেঁড়স, শসা ও গাজর। শসা ও গাজর হাই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। যা খাওয়ার ফলে উক্ত রক্তচাপ থেকে খুব সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় টক দই রাখতে পারেন। টক দই খাওয়ার ফলে হজমের উন্নতি হয় এবং ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আবার উক্ত রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের বাদাম জাতীয় খাবারও আপনার নিত্যদিনের খাবার তালিকায় রাখতে পারেন। আশা করি আপনি জানতে পেরেছেন হাই প্রেসার হলে আপনার কোন খাবার গুলো খাওয়া উচিত।

হাই প্রেসার কত থেকে কত

হাই প্রেসার কত থেকে কত এটা অনেকেই জানেন না। বর্তমান সময়ে আমাদের মধ্যে অনেকেই হাই প্রেসারে আক্রান্ত হয়ে থাকে। কিন্তু অনেকেই জানেন না একজন মানুষের শরীরে কত থেকে কত পরিমাপ হলে হাই প্রেসার বলা হয়ে থাকে। চিন্তার কোন প্রয়োজন নেই কেননা আপনাদের সামনে আমি এখনই তুলে ধরব কত থেকে কত পর্যন্ত হলে হাই প্রেসার হয়। উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেসার): ১৩০/৮০ mmHg বা এর বেশি

প্রশ্ন ও উত্তরঃ হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ

প্রশ্ন ১হাই প্রেসার হলে কোন লক্ষণগুলো দেখা যায়?
উত্তর: হাই প্রেসার হলে মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, চোখে ঝাপসা দেখা, বুক ধড়ফড় করা, এবং বুকে ব্যথা হতে পারে।

প্রশ্ন ২: লো প্রেসার হলে কী কী লক্ষণ দেখা যায়?
উত্তর: লো প্রেসার হলে মাথা ঝিমঝিম করা, শরীর দুর্বল হওয়া, ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, বুক ধরফর করা এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।

প্রশ্ন ৩: হাই প্রেসার কি নীরব ঘাতক?
উত্তর: হ্যাঁ, হাই প্রেসারকে "নীরব ঘাতক" বা সাইলেন্ট কিলার বলা হয় কারণ অনেক সময় এটি কোনো দৃশ্যমান লক্ষণ ছাড়াই শরীরে ক্ষতি করে।

প্রশ্ন ৪: লো প্রেসার হলে মস্তিষ্কের ওপর কী প্রভাব পড়ে?
উত্তর: লো প্রেসার হলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে যেতে পারে, যার ফলে মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

প্রশ্ন ৫: হাই প্রেসার থাকলে চোখের সমস্যা হতে পারে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, হাই প্রেসার থাকলে চোখ ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

প্রশ্ন ৬: লো প্রেসারের ফলে ত্বকের রং কেন ফ্যাকাশে হয়ে যায়?
উত্তর: লো প্রেসারের কারণে রক্তপ্রবাহ কমে যায়, যার ফলে ত্বক সাদা বা ফ্যাকাশে দেখায়।

শেষ মন্তব্যঃ হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ

হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ সম্পর্কে আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন। হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এর লক্ষণ সম্পর্কে আপনাদের সামনে গবেষণামূলক কিছু তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। পোস্টটি পড়ার পর আপনি খুব সহজেই জানতে পেরেছেন হাই প্রেসার লো প্রেসারের লক্ষণ গুলো কি কি। আপনার যদি হঠাৎ হাই প্রেসার বা লো প্রেসার বেড়ে যায় তাহলে খুব দ্রুত স্থানীয় ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত না হলে আপনি যেকোন ধরনের সমস্যাতে করতে পারেন।

প্রিয় পাঠক আমাদের পোষ্টের মধ্যে কোথাও যদি ভুল ত্রুটি দেখতে পান তাহলে অবশ্যই তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। কেননা মানুষ মাত্রই ভুল। আর অবশ্যই আমাদেরকে ভুল সংশোধন করার জন্য বিষয়টি আমাদের জানাবেন আমরা পরবর্তীতে অবশ্যই তা সংশোধন করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। পরিশেষে আমাদের এই পোস্টটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করতে ভুলবেন না। আর প্রতিদিন এরকম নিত্য নতুন তথ্যবহুল গবেষণামূলক কনটেন্ট পড়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটিকে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমস ব্লগারেরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url