মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের ১০টি উপায়
ঘুম না আসলে করনীয় কিমানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের দশটি উপায়ে সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা
করব। মানসিক চাপ হল সবচেয়ে অবহেলিত একটি বড় রোগ যা মানুষ তেমন কোনো
গুরুত্ব দেয় না। বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এর গবেষণা থেকে জানা
যায় ২০২৩ সালের গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় ৫০% মানুষ মানসিক সমস্যায়
ভুগছেন।
মানুসিক চাপ এটি এমন একটি সমস্যা যে সমস্যায় শুধু বড়রা নয় বরং কিশোর
কিশোরীরাও এই সমস্যায় ভুগছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে বাংলাদেশের
স্কুলগামী কিশোর কিশোরীদের মধ্যে ৭৩ পয়েন্ট ৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে মানসিক
চাপ সংক্রান্ত লক্ষণ বিদ্যমান। আর ৬৫% শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানুষের চাপের
উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের ১০টি উপায়
- মানসিক চাপ কমানোর ইসলামিক উপায়
- মানসিক চাপ কমানোর উপায়
- মানসিক চাপ কমানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায়
- মানসিক চাপ কমানোর খাবার
- মাথা থেকে চিন্তা দূর করার উপায়
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের ১০ টি উপায়
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায় রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানিনা। মানসিক
চাপ বলতে আমরা বুঝি এটি এক ধরনের মানসিক পরিস্থিতি ও ব্যক্তির চাহিদা ও ক্ষমতার
মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। আজকে আমরা মানসিক চাপ থেকে কিভাবে দূরে থাকা যায় তা
নিয়েই আলোচনা করব। আপনারা যদি এই বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে চান তাহলে
অবশ্যই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে আসুন দেরি না করে চলে যাই
মূল আলোচনায়।
১. ধর্মীয় কাজে মনোনিবেশ করাঃ মানসিক চাপ কমানোর সবচাইতে অন্যতম একটি উপায়
হচ্ছে ধর্মীয় কাজে মনোযোগ দেওয়া। নিজের স্রষ্টার প্রতি অগাধ বিশ্বাস স্থাপন করা
তকদিরে যা রয়েছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা। কারো ভিতরে যখন ধর্ম জ্ঞান কম
হয়ে যায় তখন সে নিজেকে হতাশায় ডুবিয়ে দেয় সে ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি চিন্তা
করে যার ফলে মানসিক দুশ্চিন্তায় নিমজ্জিত হয়। তাই স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস
রেখে ধর্মীয় কাজে মনোযোগ দিলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায়।
২. নিজেকে ছোট করে দেখাঃ অনেক মানুষ রয়েছে যারা নিজেকে সব সময় ছোট করে
দেখে আর এটা মোটেও উচিত নয় এরকম চিন্তা ভাবনা থেকে মানসিক চাপ সৃষ্টি
হয়। তাই সব সময় নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এবং নিজেকে মূল্যবান
ভাবতে হবে এটা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি
কেউ নিজেকে ছোট করে দেখে তাহলে তার মধ্যে বিশ্বাস থাকে না ফলে যে কোন কাজের
ক্ষেত্রে সে পিছিয়ে পড়ে তাই নিজেকে আত্মবিশ্বাসী ও মূল্যবান মনে করতে হবে সব
সময়।
৩. কাজের সময় বিরতি নিনঃ অনেক সময় কাজ করতে করতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়ে
তখন বিভিন্ন ধরনের মানসিক চিন্তা মানুষের ওপরে চেপে বসে তাই কাজের ফাঁকে কিছুক্ষণ
বিরতি নিতে হয়। এরপর একটু বাইরে থেকে হেঁটে আসলে রিফ্রেস লাগে। কাজের
প্রতি আগ্রহ বাড়ে এবং মানসিক বিষাদ দূর হয়।
৪. পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটানঃ মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি
অন্যতম উপায় হল পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটানো। অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে
পোষা প্রাণী সাথে যদি মানুষ সময় কাটিয়ে থাকে তাহলে তার মানসিক
চাপ অনেকাংশে কমে যায়। সে ক্ষেত্রে নিজের যদি পোষা প্রাণী থাকে তাহলে
খুবই ভালো হয় আর না থাকলে অন্য কারো পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটান
তাহলে তাহলে মানুষের চাপ কমবে।
৫.ডিজিটাল ডিভাইস থেকে বিরতিঃ বর্তমানে ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি আসক্তি প্রায়
সকলের রয়েছে এই ডিজিটাল ডিভাইসের খারাপ প্রভাবে অনেক সময় মানুষ মানসিক
চাপে ভুগে থাকে। কেননা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক খারাপ খারাপ সংবাদ দেখে যার
ফলে যেমন সময় নষ্ট হয় তেমন নিজের কাজের প্রতি মনোযোগ ও নষ্ট হয়ে যায় আর
মানুষের চাপ বৃদ্ধি পায়।
৬. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়ামঃ মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের আরেকটি অন্যতম উপায়
হল নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা কেননা ব্যায়াম মানসিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে
সাহায্য করে এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন শরীর চর্চা করলে
যেমন মানুষের শারীরিক উপকার পাওয়া যায় ঠিক তেমন মানসিক স্বাস্থ্যের উপকার
পাওয়া যায়।
৭. পর্যাপ্ত ঘুম বিশ্রামঃ বর্তমানে রাত জেগে থাকা সকলের খারাপ অভ্যাসে
পরিণত হয়েছে এজন্য দিন দিন মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মানসিক প্রশান্তির
জন্য পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের বিকল্প নেই। তাই রাত জাগার অভ্যাস বাদ দিয়ে সঠিক
সময় ঘুমাতে যেতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে তাহলে মানসিক চাপ কমানো
যাবে।
৮. উপযুক্ত খাদ্য তালিকা গ্রহণঃ অনেক সময় খাবারের অনিয়মের কারণে
মানসিক সমস্যা বা চাপ বৃদ্ধি হতে পারে। তাই সবার আগে নিজের খাদ্য তালিকার দিকে
খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত পরিমিত পরিমাণের সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এর
ভেতর ফল শাক-সবজি প্রোটিন বেশি করে খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে
হবে এবং তেলে ভাজা ঝাল শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে । এর সাথে
সাথে সিগারেট কফি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
৯. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামঃ শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপ
নিয়ন্ত্রণ এর ক্ষেত্রে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।কেননা গভীর
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম শরীরকে অনেকাংশে আরাম প্রদান করে থাকে। তাই কেউ
যদি প্রতিদিন কয়েক মিনিট করে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করে তাহলে কঠিন রোগ থেকে
নিজেকে দূরে রাখতে পারবে এবং স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় থাকার ফলে কাজের কর্ম
দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং মানসিক হতাশা দূর হবে।
১০. পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোঃ পরিবার ও প্রিয়জনদের সাথে
সময় কাটালে অনেক সময় মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। তাই মানসিক চাপ
নিয়ন্ত্রণে পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো উচিত। তাহলে মানসিক চাপ
কমে যাবে এবং মানসিক শান্তি বৃদ্ধি পাবে যার ফলে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি হবে এবং
হতাশা দূর হবে।
মানসিক চাপ কমানোর ইসলামিক উপায়
মানসিক চাপ কমানোর ইসলামিক উপায় রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলে আমাদের মানসিক চাপ
আসবে না।মানুষের সাথে দুশ্চিন্তা ওতপ্রতভাবে জড়িত। যখনই খুব বেশি পরিমাণ
দুশ্চিন্তা আসে তখন সেটি নিয়ে হতাশ হওয়া যাবেনা কারণ সুখ দুঃখ মিলিয়ে মানুষের
জীবন সেটা মাথায় রাখতে হবে। পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ রয়েছে
''নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কষ্টমধ্যে।''
১ তকদিরের ওপর বিশ্বাসঃ
ড্রিমস ব্লগারেরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url