দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ - মুখের ক্যান্সারের দুটি কারণ

রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ কি? দাঁতের মাড়ির ক্যান্সার যা মূলত মুখের ভেতরে ক্যান্সারের একটি ধরন। সাধারণত মুখের ক্যান্সার দাঁতের মাড়ি বা এর আশেপাশে হয়ে থাকে এরপর আস্তে আস্তে সবদিকে তা ছড়িয়ে পড়ে। এর সঠিক কারণ না জানা থাকলেও এর বেশ কিছু লক্ষণ চিহ্নিত হয়ে থাকে।
দাঁতের-মাড়িতে-ক্যান্সারের-লক্ষণ
এই লক্ষণগুলো জানতে হলে আমাদের এই পোস্টটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজেই জেনে যাবেন দাঁতের মাড়ির ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে। এছাড়াও এই পুষ্টি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন তাদের মধ্যে কেন ঘা হয়? দাঁতের মধ্যে ঘা হলে করণীয় ইত্যাদি সম্পর্কে তো দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ

দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ

দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি তা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। গবেষকদের মতে দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সার হলে বেশ কিছু লক্ষণ চিহ্নিত করা যায়। জেনে নিন লক্ষণ গুলো কি কি? মাড়িতে স্থায়ী ফোলা বা শক্ত গুটি দেখা দিলে এটি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। সাধারণত এই ফোলাতেকোন ধরনের ব্যথা থাকে না। তবে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথার উপস্থিতি দেখা দিতে পারে। বাড়িতে ঘা বা ক্ষত দেখা গেলে মাড়ির ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যদি এই ক্ষত বা ঘা দুই সপ্তাহের বেশি থাকে।
এই ক্ষতভাগ ঘা থেকে রক্ত পড়তে পারে এবং ধীরে ধীরে খারাপ আকার ধারণ করতে পারে। মাড়ির স্বাভাবিক গোলাপি রঙ পরিবর্তন হয়ে লালচে, সাদাটে, বা গাঢ় রঙের হয়ে যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে মাড়ির প্যাচ বা দাগ দেখা দিতে পারে। দাঁত হঠাৎ করে নড়বড়ে হয়ে যাওয়া বা মাড়ি থেকে আলগা হয়ে যাওয়াও ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। কোন আঘাত ছাড়া সহজেই যদি দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয় তাহলে সেটি মাড়িতে ক্যান্সার হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ।

মাড়িতে যদি ক্রমাগত ব্যথা অনুভূত হতেই থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। মাড়ির টিস্যুতে সাদা (লিউকোপ্লাকিয়া) বা লালচে (এরিথ্রোপ্লাকিয়া) প্যাচ দেখা দিলে এটি প্রাথমিক ক্যান্সারের ইঙ্গিত দিতে পারে। মাড়ি বা মুখের কোনো অংশে অনুভূতি কমে গেলে বা অসাড়তা অনুভূত হলে এটি সতর্ক হওয়ার কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে কিছু নির্দিষ্ট কারণ বা অভ্যাসের জন্য দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সার হয়ে থাকে। তার মধ্যে বিশেষ করে ধূমপান করা।

মুখের ক্যান্সারের দুটি কারণ

মুখের ক্যান্সারের দুটি কারণ নিয়ে বিস্তারিতভাবে আমাদের এই পোস্টটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। মুখের ক্যান্সার অনেকগুলো কারণের জন্যই হয়ে থাকে তার মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য দুটি কারণ হলো নিয়মিত বিড়ি জর্দা তামাক গুল সেবন করা। আরেকটি হল মুখের সঠিক পরিচর্যার অভাব। তামাকজাত দ্রব্য সেবন করায় মুখের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। মুখের ক্যান্সার সম্পূর্ণ ছড়ানোর আগে কিন্তু তাকে সনাক্ত করা সম্ভব।
মুখের-ক্যান্সারের-দুটি-কারণ
তামাক সেবন মুখের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি (ACS), এবং বিভিন্ন গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, তামাকের উপাদান সরাসরি মুখের টিস্যুগুলোর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা দীর্ঘ মেয়াদে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। ধূমপান করার সময় ধোঁয়া মুখের ভিতরে অনেকক্ষণ ধরে থেকে যায় যার ফলে মুখ গহবরের টিস্যু সরাসরি ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধুমাত্র মুখ গহবরি নয় বরং ফুসফুস গলা শ্বাসনালী জিহ্বা তে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তামাক সেবনের ফলে আশি থেকে নব্বই শতাংশ মানুষ মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

দাঁতের মাড়িতে ঘায়ের ওষুধ

দাঁতের মাড়িতে ঘায়ের ঔষধ এর নাম হয়তো অনেকেই জানেন না। চিন্তার কোন প্রয়োজন নেই কারণ আমাদের এই পোস্টটিতে দাঁতের মাড়িতে ঘা হলে কোন ওষুধ খাবেন কোন ওষুধ খেলে দ্রুত সুস্থ পাবেন এ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। জেনে নিন দাতের বাড়িতে ঘায়ের ভালো ওষুধের নাম। দাঁতের মাড়িতে ঘা হলে তা অনেক সময় অস্বস্তি এবং ব্যথার কারণ হয়। এই সমস্যার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ এবং চিকিৎসা ব্যবহৃত হয়। নিচে দাঁতের মাড়ির ঘা সারাতে ব্যবহৃত ১০টি ওষুধ বা চিকিৎসার নাম দেওয়া হলোঃ

  • কোরটিকোস্টেরয়েড জেল (Corticosteroid Gel) এটি প্রদাহ কমাতে বা ব্যথার উপশমে কার্যকরী।
  • ক্লোরহেক্সিডিন মাউথওয়াশ (Chlorhexidine Mouthwash) এই ঔষধ মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
  • হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড (Hydrogen Peroxide Solution) এই ঔষধ মাউথওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করলে মুখের জীবাণু ধ্বংস করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
  • স্যালিসাইলেট জেল (Salicylate Gel) এই ওষুধ মাড়ির ব্যথা দূর করতে কার্যকরী।
  • প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন (Paracetamol/Ibuprofen) মাড়ির ব্যথা কমাতে সহায়ক।
  • টেট্রাসাইক্লিন মাউথওয়াশ (Tetracycline Mouthwash) এই ওষুধ মুখের ঘা দ্রুত শুকানোর জন্য দেয়া হয়ে থাকে।
  • বোরোগ্লিসারিন (Boroglycerin) এই ঔষধ মাড়ির ঘা ও ব্যথা কমাতে খুবই কার্যকরী।

প্রাথমিক পর্যায়ে মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ

প্রাথমিক পর্যায়ে মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি এক পলকে জেনে নিন। মুখের ক্যান্সার হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে তার লক্ষণ হল মুখে ঘা হওয়া। বা কোন আঘাত ছাড়াই ব্রাশ করার সময় মাড়ি থেকে রক্ত বের হওয়া। খাবার খাওয়া বা চিবানোর সময় মুখে ব্যথা হওয়া। দাঁতের গোড়া নড়বড়ে হয়ে যাওয়া। মুখ বা চোয়াল ফুলে যাওয়া। গলার সুরের পরিবর্তন পরিবর্তন হওয়া বা কথা বলতে সমস্যা সৃষ্টি হওয়া। মুখের ভেতরে ঘা হলে দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও মুখের ঘা না শুকানো। মুখের ভিতরে মাড়িতে টেপা হাওয়া। এই কারণগুলো মূলত মুখের ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষ্য করা যায়।

দাঁতের মাড়িতে ঘা কেন হয়

দাঁতের মধ্যে ঘা কেন হয় তা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। মুখের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ঘা হয়ে থাকে। মুখে সাদা ফুটি ঘা হয় তা মূলত পুষ্টি জনিত কারণে বা ভিটামিনের অভাবে হয়ে থাকে। এই ঘা সাধারণত মুখের মধ্যে ৫ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয়ে থাকে। এটি সাধারণত ঠোঁটে জিহবাতে জিহবার নিচে দাঁতের মাড়িতে হয়ে থাকে। এরকম ঘা সংখ্যা তে একটি বা একের অধিকও হতে পারে। এই ঘা বা ক্ষত মুখের মধ্যে হলে রোগী প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত করে থাকে।

এ ঘা হলে খাওয়া দাওয়া করতে অনেক সমস্যা হয় এবং গরম বা ঝাল কিছু খাওয়ার সময় অনেক কষ্ট হতে পারে। সাধারণত এ ঘা অপুষ্টি, ভিটামিনের স্বল্পতা, মানসিক অসুস্থতা, পিরিয়ডের সময় এটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে এই ঘা তিন থেকে চার মাস পর পর হতে থাকে। এই ঘা হলে আপনার স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ সেবন করা উচিত। নয়তো এটা বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। আপনার মাড়িতে ঘা হলে অবশ্যই স্থানীয় ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

দাঁতের মাড়িতে ঘা হলে করণীয়

দাঁতের বাড়িতে ঘা হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো। এ ধরনের ঘা হলে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হল প্রচুর পরিমাণে আপনাকে জল পান করতে হবে। তার সাথে সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। দিনে অন্ততপক্ষে ৮ ঘন্টার উপরে ঘুমাতে হবে। প্রচুর পরিমাণে টাটকা ফল বা টাটকা শাকসবজি খেতে হবে। যাতে আপনার শরীরে কোন ধরনের ভিটামিনের অভাব না থাকে। এ সময় সকল ধরনের কোলড্রিংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
দাঁতের-মাড়িতে-ঘা-হলে-করণীয়
এ সময় আপনার ঠান্ডা বা গরম খাবার খাওয়ার সময় যদি অনেক জ্বালা পোড়া হয় তাহলে এ ধরনের খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন। এ সময় আপনি চাইলে ভিটামিন বি অথবা ভিটামিন টুয়েলভ ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন। খাবার খেতে গেলে যদি অনেক জ্বালা হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শে মলম ব্যবহার করতে পারেন। এই ধরনের ঘা সাধারণত 5 থেকে সাত দিন স্থায়ী হয়ে থাকে। পাঁচ থেকে সাত দিন পরে এটি নিজে থেকে ব্যথা কমে যায় এবং ক্রমাগত ভালো হওয়া শুরু করে।
এ ধরনের ঘা হলে কোন ধরনের দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই। এ ধরনের ঘা এর চিকিৎসা আপনি চাইলে ঘরে বসেই করতে পারেন। চিকিৎসকের কাছে না গেলেও কোন সমস্যা নেই। কিন্তু মনে রাখবেন এই ধরনের ঘা যদি তিন সপ্তাহের বেশি ধরে থাকে তাহলে কিন্তু সেটি অবশ্যই চিন্তার কারণ। যদি তিন সপ্তাহের বেশি ধরে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। যদি তিন সপ্তাহের বেশি ঘাটি থেকে থাকে তাহলে সেটি থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে কিছু রিপোর্ট করা হয়।

শেষ মন্তব্যঃ দাঁতের মাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ

দাঁতের বাড়িতে ক্যান্সারের লক্ষণ কি তা আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন। বিভিন্ন কারণে মুখের ভিতরে ক্যান্সারের মত ভয়ংকর রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তামাক জাত দ্রব্য সেবন করা। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত এগুলো খাওয়া বা পান করা থেকে বিরত থাকা। কেননা আমাদের বাংলাদেশে প্রতিবছর সবচাইতে বেশি মুখের ক্যান্সারের জন্য অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে থাকে। আমরা যদি এমত অবস্থায় সচেতন না হয় তাহলে ভবিষ্যতে এর বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশের পড়তে পারে।

পরিশেষে আমাদের এই পোস্টটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই পোস্টের নিচে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করতে ভুলবেন না। আমাদের পোস্টের মধ্যে কোথাও যদি ভুল ত্রুটি দেখতে পান তাহলে অবশ্যই তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। প্রিয় পাঠক আমাদের এই পোস্টটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করুন। আর আপনার যদি কোন বিষয় জানার আগ্রহ থাকে তাহলে বিষয়টি অবশ্যই আমাদেরকে জানান। সবশেষে বলতে চাই আপনি যদি প্রতিদিন এরকম নিত্য নতুন তথ্যবহুল কনটেন্ট করতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটকে নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ড্রিমস ব্লগারেরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url